• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

দামুড়হুদা উপজেলা প‌রিষদ নির্বাচনের বা‌কি আর দু'‌দিন: শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা নি‌য়ে মাঠ চষছেন প্রার্থীরা

  • ''
  • প্রকাশিত ০৫ মে ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা প্র‌তি‌নি‌ধি: 

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ ৬ষ্ঠ নির্বাচন এ‌কেবা‌রে দোর গোড়ায়। আর মাত্র দু‌'দিন পর প্রথম দফায় আগামী ৮ মে বুধবার দামুড়হুদা উপ‌জেলা নির্বাচ‌নের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হ‌বে। শেষ মুহু‌র্তে প্র‌তিদ্বন্ধি প্রার্থী ও তা‌দের কর্মীরা দিন রাত সমান তা‌লে নির্বাচ‌নের মাঠ চ‌ষে বেড়া‌চ্ছেন। ত‌বে প্র‌তিদ্ব‌ন্দ্বি দু'প্রার্থী নির্বাচনের নির‌পেক্ষতা নি‌য়ে শঙ্কা ও উৎক‌ন্ঠায় আ‌ছেন ব‌লেও জা‌নিয়ে‌ছেন।

৬ষ্ঠ দামুড়হুদা উপজেলা প‌রিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প‌দে ১ জন (বিনা প্র‌তিদ্ব‌ন্দ্বি নেই) ও ম‌হিলা ভাইস চেয়ারম্যান প‌দে ২ জন অংশ নি‌য়ে‌ছেন।

চেয়ারম্যান প‌দে প্র‌তিদ্ব‌ন্দ্বি ৩ হ‌লেন, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগর টগরের আপন ভাই দর্শনা পৌর আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী মুনছুর বাবু (আনারস প্রতীক), পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ থে‌কে পদত্যাগ ক‌রে উপ‌জেলা নির্বাচ‌নে অংশ নি‌য়ে‌ছেন জেলা আওয়ামী লী‌গের সা‌বেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এস এ এম জাকারিয়া আলম (মোটরসাইকেল প্রতীক) ও উপ‌জেলা যুব লী‌গের সা‌বেক আহ্বায়ক এড. মো. আবু তালেব (ঘোড়া প্রতীক)। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ জন মো. শফিউল কবির (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. সাহিদা খাতুন (কলস প্রতীক) ও জেলা পরিষদের সা‌বেক সদস্য তানিয়া খাতুন (ফুটবল প্রতীক)।

চেয়ারম্যান প‌দে চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের এম‌পি আলী আজগর টগ‌রের আপন ভাই প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচ‌ন নি‌য়ে শঙ্কার কথা জা‌নি‌য়ে‌ছেন অপর দু'প্রার্থী এস এ এম জাকারিয়া আলম ও এড. মো. আবু তালেব। তিনারা বলেন, আমাদের প্র‌তিদ্ব‌ন্দ্বি প্রার্থী স্থানীয় সংসদ সদস্যের আপন ভাই। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমরা ও সাধারণ ভোটাররা আশঙ্কা করছি, স্থানীয় প্রশাসনসহ যারা সরকারি কাজে নিয়োজিত আছেন তারা ভো‌টের দিন তাকে সহযোগিতা করতে পারেন। আমরা চাই একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেক্ষেত্রে আমরা ৮ মে ভো‌টের দিন সমান সুযোগ পাবো কি না। বা আমাদের এখানে নিরপেক্ষ আচরণ করা হবে কি না। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যারা কাজ করছেন, তারা নিরপেক্ষতা বজায় রেখে চলবেন কি না। এ‌নি‌য়ে আমরা যথেষ্ট স‌ন্দিহান। নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে‌দি‌কে রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।

প্র‌তিদ্ব‌ন্দ্বি দু'প্রার্থীর অ‌ভি‌যো‌গের বিষ‌য়ে এম‌পির ভাই আলী মুনছুর বাবু ব‌লেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হ‌য়ে সাধারণ ভোটার‌দের বিভ্রাস্ত কর‌তে ওরা মিথ্যে বা‌নোয়াট অ‌ভি‌যোগ তুল‌ছে। এবং বি‌ভিন্ন অপপ্রচার চালা‌চ্ছে। আমার ভাই এম‌পি হ‌লেও এখ‌নো পর্যন্ত উপ‌জেলা নির্বাচন নি‌য়ে কা‌রো সাথে ‌কোন কথা ব‌লে‌ছেন এমন কোন প্রমাণ নেই। আমার ভাই নির্বাচন থে‌কে সম্পন্ন দু‌রে স‌রে আ‌ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মোতাওয়াক্কেল রহমান প্র‌তিদ্ব‌ন্দ্বি প্রার্থী‌দের উ‌দ্দে‌শ্যে বলেন, যেকোনো বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে আপনারা প্রমাণসহ অভিযোগ দিবেন। আমি রিটার্নিং অফিসার হিসেবে এতোটুকু বলতে পারি, এ বিষয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। আমরা একটি সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেব। ভয়-ভীতির বিষয়ে যেটি বলছেন, আপনারা হয়ত জানেন মাঠে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আ‌ছে, থাকবেন। নিয়ম-নীতি, বিধি-বিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি কোথাও অনিয়ম হয়, আমার সর্বোচ্চ ক্ষমতা সেখানে প্রয়োগ হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকের এজেন্ট কেন্দ্রে অনেক দায়িত্ব পালন করবে। তথ্য-প্রমাণসহ দিতে পারলে সেই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে।প্রিজাইডিং অফিসাররা সকলেই সরকারি কর্মকর্তা। আমার তো মনে হয় না, তারা স্বউদ্যোগে কিছু করবেন। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, যেই অনিয়ম করবেন, তার বিরুদ্ধে সাথে সাথে আমরা অ্যাকশনে যাব। এর জন্য নীতিমালা আছে। নীতিমালার বাইরে কোনো প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ হয়‌নি।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, জেলা পুলিশ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। আমি এবং আমার টিম রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা তথা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে সুন্দরভাবে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যে নির্দেশনা আছে, সেই নির্দেশনার কোনো ধরনের ব্যত্যয় হবে না। যিনি ব্যত্যয় করবেন, তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয়, কে কোথায় আছেন, এগুলো আমরা গণ্য করব না। সেটা আপনারা আমাদের কার্যক্রমে প্রমাণ পা‌চ্ছেন, পাবেন। কোন প্র‌তি‌যোগীতায় দুইজন চ্যাম্পিয়ন হয় না। আপনি হারেন বা জিতেন, আপনারা একে অপরের প্রতিবেশী। মেনে নেওয়ার মন-মানসিকতা রাখতে হবে। আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই, যিনি অপরাধ করবেন, আইনের ব্যত্যয় ঘটাবেন, তাকে আমরা তাৎক্ষণিক আইনের আওতায় নিয়ে আসব।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. ‌কি‌সিঞ্জার চাকমা বলেন, নির্বাচনী দায়িত্ব সাংবিধানিক এবং আইন দ্বারা সীমাবদ্ধ, এটা নির্ধারিত। এর ব্যত্যয় করার কোনো সুযোগ নেই। রিটার্নিং কর্মকর্তা তিনি তার আইন কর্তৃত্ববলে অথরিটি অ্যাপ্লাই করবেন। এবং রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্দেশনা মোতাবেক যে কার্যক্রম করার প্রয়োজন হয়, সেগুলো তিনি করছেন এবং করবেন। আইন সকলের জন্য প্রযোজ্য, সকলের জন্য সমান। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে যারা থাকবেন, তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার যে আদেশ বা সহযোগী এখানে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে তারা মানবেন। সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো সুযোগ নেই। আমরা সকলে সতর্ক আছি, সচেতন আছি। কোনো অভিযোগ আসলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads